0
যাচ্ছিলাম ঢাকা। যেমনি কম টাকায় ঢাকা যাচ্ছি, তেমনি ভাঙা বাস। যেমনি নরমাল বাস, তেমনি থামে লোক দেখলে ।যত লোক তত টাকা এই লোভের খাপ্পরে ওরা বাস চলায় ।কিন্ত মানব সমায়ের তেরোটা বাজাইয়া দেয়। দীর্ঘ সেই জার্নি। বিরক্তের শেষ নেই। চরম বিরক্ত নামক শব্টা মনে পড়ে বারবার সেদিন। মজার কথা হল বাবার টাকাতো বাচাতে পেরেছি। বড় হয়েছি ঠিকই লম্বা দিয়ে, কিন্ত এখনি চলি বাবার টাকা দিয়েই। প্রয়োজন ছাড়া কখনোই বাাবার বেশি টাকা নেই নি। এমনকি নাস্তার জন্যও। সেই টাকা রক্ষা করতে পারা কত যে মজার ব্যাপার। যে রক্ষা করে সেই এটা অনূভুত করতে পারে।
যা হোক যাচ্ছিলাম।যেতে যেতে অর্ধেক রাস্তায় গাড়ি গেল নষ্ট হয়ে ।গাড়ি যেমন ভাঙা, তেমনি গাড়ির কর্মচারীর পকেটেরও অবস্থা।সবার কাছে টাকা চেয়ে চেয়ে ধার করে সবশেষে গাড়ি ঠিক করতে আসলো মেকানিকসরা  ।তারা তাদের কর্মের চেয়ে তিনডবল টাকা দাবি করলো। হলে গাড়ি ঠিক করে দিব, নইলে না। কারন ওরা যখন গাড়ি করে কাজে আসে তখন ওরা মেকানিকস বললেও এক টাকা কম নেয়না এই বাসগুলো। যা হোক ওরা কাজে নামলো। ওদের কেউ লাইট ধরলো, কেউ ভেতর ডুকলো, কেউ বসে রইলো ।এদের মধ্যে কেউ একজন খুব মহত্ত্ব মনের। এসে ফ্রি ভাবে ওই মেকানিকসদের লাইট ধরে সাহায্য করতে চাচ্ছে। কিন্ত কোন লাইট ওর কাছে নেই। তাই মোবাইল চাচ্ছে গাড়ির যাত্রিদের কাছ থেকে। কেউ একজন ফোনের লাইট জ্বলে ওনার হাতে দিল ।ওনি লাইট জ্বলাচ্ছে। যার ফোন নিল, সে লোকটি খুব মনযোগী। ইনি ওনার দিকে তাকিয়ে রইলো। ওনার আচার সুবিধার নয় বলে ওনি ফোনটি চেয়ে নিল। তারপর ঐ মহৎ হৃদয়ের ফ্রি স্বেচ্ছাচারী লোকটি বলল, "এ কেমন মানবতা? আমি আলো দেখাচ্ছি যাতে কাজ তাড়াতাড়ি হয়, মানুষকি এমনি হতে পারে? কেউ লাইট দেন ভাই আমি লাইট দেখাই। "আমিও ফোনটি দিলাম। আমি ওনার পিছনে জগিয়ে ধরার মতো ছিলাম। কারণ ফোনটিই আমার সম্বল। কিছুক্ষণ পর ওনি আমার ভাবভঙ্গি দেখে ফোনটি দিল। এভাবে পরে আবার কারো ফোন নিল। আধা ঘন্টা পর শুনলাম ঐ স্বেচ্ছাচারী মহৎ হৃদয়ের লোকটি কোন এক যাত্রির ফোন নিয়ে পালাইছে। কি মিষ্টি মহত্বের কথা! কি স্বেচ্ছায় অবদান! অবশেষে একি প্রতিদান!
যে লোকটি আপনাকে খুব বড় করার স্বপ্ন দেখাচ্ছে, যে মানুষটি আপনাকে বাচার স্বপ্ন দেখাচ্ছে, যে মানুষটি আপনার ডিপেনডেন্ট হচ্ছে, সেই লোকটিই সবার চেয়ে অনেক আগে আপনাকে ফেলে চলে যাবে। তাই পৃথিবীতে সহজে কাউকে বিস্বাস করতে নেই ।তাছাড়া একটি মানুষকে দূর থেকে দেখতে অনেক সুন্দর, কিংবা দুর থেকে তার সমন্ধে কম জানাই অনেক ভাল লাগতে পারে। কিন্ত একটি মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখলে কিংবা খুব কাছ থেকে জানলে খুব কম সংখ্যক লোকেরি ভাল লাগবে। আমার মুখটি খুব অসুন্দর ।কিন্ত দূর থেকে দেখলে খুব সুুন্দর মনে হয় কারণ তাতে বরূনগুলো দেখা যায় না।
ভুল-শুদ্রেই মানুষ। ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া মানুষের কাজ। যে লোকগুলো ঐ চোরের মত মহৎ কথা বলে, তাদের বিস্বাস না করাই বেটার ।পৃথিবীতে সত্যিকার মহৎের সংখ্যা আসলেই খুব কম। যাকে তাকে মহৎ ভাববেন না,নিজের বাশ নিজেই খাবেন না।

Post a Comment

 
Top