0

Akbindu Shishir
সহকারি পরিচালক , বাংলাদেশ ব্যাংক
শুরুতেই আসেন স্ট্যাটিসটিক্স টা ক্লিয়ার হই, প্রায় দশ হাজার এমসিকিউ উত্তীর্ন পরীক্ষার্থী অংশ নিবেন রিটেন পার্টে যেখান থেকে ভাইভার জন্য হয়তো কম-বেশি হাজার খানেক রাখা হবে। চূড়ান্ত নিয়োগ পাবেন শ'তিনেক ছেলেমেয়ে, অর্থাৎ এমসিকিউ উত্তীর্ন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ৩% চূড়ান্তভাবে মনোনীত হবেন। বুঝতেই পারছেন কম্পিটিশন কতটা বেশি।
স্ট্যাটিসটিক্স দিয়ে শুরু করার উদ্দেশ্য হল এটা মনে করিয়ে দেয়া যে, যা করার সেটা রিটেন পার্টেই করতে হবে। শুধু টিকলেই হবে না, আপনাকে আপার মেরিট পজিশনও সিকিওর করতে হবে। এসব সবার জানা কথা।
রিটেন এক্সামের জন্য সময় আছে মাত্র সপ্তাহখানেক। এই অল্প সময়ে নতুনভাবে খুব বেশি কিছু আপনি করতে পারবেন না, শুধুমাত্র এক্সাম হল স্ট্রাটেজি সেট করা দরকার এই সময়ে। শুধু এখানেই ফোকাস করব।
স্ট্রাটেজি-১ঃ গুড টাইমিং
প্রথমেই ২০১৫ সালের অফিসার (জেনারেল) প্রশ্নটা দেখেন, এটাই আপনাকে পথ দেখাবে। সেখানে প্রশ্ন কাঠামো ছিল এরকমঃ
বিবি অফিসার (জেনারেল) - ২০১৫
১. ফোকাস_ইংলিশ ৩০+৩০ = ৬০
২. রিডিং কম্প্রিহেনসন = ২০
৩. ম্যাথ = ৮ ম্যাথ * ৫ = ৪০
৪. ফোকাস_বাংলা = ৩০
৫. ট্রান্সলেশন ১৫+১৫= ৩০
৬. প্যারাগ্রাফ ৪ টা*৫ = ২০
যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে রিটেন এক্সাম দিয়েছেন তারা দেখলেই বুঝতে পারবেন এরকম কোয়েশ্চেন প্যাটার্নে মেইন চ্যালেঞ্জ হল টাইম মেইনটিনেন্স। সুতরাং, নেক্সট এক্সাম কোয়েশ্চেন এরকম লেংদী হলে আপনাকে আগেভাগে মাথায় সেট করে রাখতে হবে ৭/৮ টা ম্যাথ সলভ করে বাকি সময়ে কোন প্রশ্নে কত সময় দিবেন।
নেক্সট উইক এক্সামে টাইম ম্যানেজমেন্ট হতে পারে ১ নং চ্যালেঞ্জ, যারা সব প্রশ্নের উত্তর করে আসবেন তারা এক্সাম হল এ অন্তত অর্ধেক কম্পিটিটরকে পিছনে ফেলে আসবেন নিশ্চিতভাবে। আরও বেশি নিশ্চিত যে এটা জানার পরও, মাথায় থাকার পরও, এটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তার পরেও অনেকেই টাইমিং মিসম্যাচের কারনে রেস থেকে ছিটকে যাবেন।
টিপসঃ মোট ১২০ মিনিট সময়ে ২০০ মার্কসের উত্তর করতে হবে; অর্থাৎ, প্রতি ১০ মার্কসের উত্তর করতে সময় পাবেন গড়ে ৬ মিনিট। নেক্সট কয়েকদিন আপনার কাজ হবে নিজের মত করে মাথায় টাইমিং প্লান সেট করা এবং পরীক্ষায় সেটা সচেতনভাবে কাজে লাগানো।
স্ট্রাটেজি-২ঃ প্রাইওরিটি সেটিং
রিটেন প্রিপারেশনে অলমোস্ট সবার প্রাইম কনসার্ন থাকে ফোকাস রাইটিং। এই পার্টটা নিয়ে অধিক সময় দেয়ার কারনেই অনেক সময় আপনি পিছিয়ে পড়তে পারেন।
লিচেন কেয়ারফুলি,
ম্যাথ, কম্প্রিহেনসন আর ট্রান্সলেশন হল রিটেনে ভাল করার জন্য স্ট্রাটেজিক্যালি মোস্ট ওর্থফুল আইটেম। এই তিন পার্ট মিলিয়ে প্রায় ১২০-১৩০ মার্কস কাভার করে ফেলে এবং শুধুমাত্র এই তিনটা আইটেমে ভাল করে আপনি আপার মেরিট পজিশনটা সিকিওর করে ফেলতে পারেন।
ম্যাথ, কম্প্রিহেনসন আর ট্রান্সলেশনে যেদিন ভাল করবেন, সেদিন আপনি সোনার হরিনটা মোটামুটি ধরেই ফেলবেন। আমার অভিজ্ঞতা হল খুব কম পরীক্ষার্থী আছে যারা কম্প্রিহেনসন আর ট্রান্সলেশন প্রাকটিস করেন। আর এখানে মাস্টারিং টা না আসা পর্যন্ত আপনি ব্যাংক জব টা পাবেন না, এটা সব পরীক্ষার জন্য প্রযোজ্য।
টিপসঃ দীর্ঘ সময় ধরে রেগুলার ম্যাথ, কম্প্রিহেনসন আর ট্রান্সলেশন প্রাকটিস করা দরকার, শর্টকাট জানা নাই। তবে লাস্ট কয়েকদিন বিগত ২/৩ বছরের ব্যাংক এক্সামের সব কম্প্রিহেনসন আর ট্রান্সলেশনগুলো সলভ করতে পারেন, অনেকটা হেল্প হবে।
মূল কথাগুলো সব মোটামুটি বলা শেষ। এই দুটা স্ট্রাটেজি মাথায় থাকলেই এনাফ। আরও কয়েকটা কথা মাথায় রাখুনঃ
(১) কোয়েশ্চেন প্যাটার্ন নিয়মিত পরিবর্তন হয়, আগের বছর থেকে এবারের প্যাটার্ণ আলাদা হতেও পারে। তবে টাইমিং স্ট্রাটেজি ঠিক রাখবেন।
(২) ফোকাস রাইটিং এ রাইটিং কোয়ালিটির চেয়ে প্রেজেন্টেশন কোয়ালিটি নিয়ে বেশি কনসার্ন থাকবেন। কাটা ছেড়া না হলে, বানান ভুল না হলে আর লেখা স্পষ্ট/সুন্দর হলে ভাল মার্কস পাবেন।
(৩) বিজনেস লেটার/প্যারাগ্রাফ মার্কস পাবার ভাল আইটেম। বিজনেস লেটারের কন্টেন্ট স্বল্প দৈর্ঘ্য আর প্রাসঙ্গিক হবে।
পরীক্ষায় কি কি ফোকাস রাইটিং আসতে পারে এটা নিয়া বেশি মাতামাতি করে সেন্টার ফোকাস থেকে সরে যাবেন না। ফোকাস রাইটিং কমন পাবার চেয়ে অনেক অনেক বেশি জরুরি সবগুলো আইটেম টাইম মেনটেইন করে সুন্দরমত লিখে আসা।
আমার কাছে সব ম্যাথ আইটেম আর সব ফোকাস রাইটিং আইটেম সমান গুরুত্ববহ। এসব সাজেশন কোন কাজে আসে না। মূল কাজের বিষয় দুটো, সেটাই বলার চেষ্টা করেছি। আমি জানি, এরকম সাজেশন খুব অল্প কয়েকজনেরই কাজে আসবে, তবে শুভকামনা সবার জন্যই।
সৃষ্টিকর্তা সকলের মঙ্গল করুন।

Post a Comment

 
Top