এক ছেলেকে তার বাবা পাঠালেন পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী বাড়ির বাড়িতে উপদেশ
নেবার জন্য। ছেলেটা পাহাড় ডিঙিয়ে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে সেই জ্ঞানী ব্যক্তির
প্রাসাদে গিয়ে হাজির হলো। জ্ঞানী ব্যক্তি তখন আরো কয়েকজন মানুষের সঙ্গে বসে
গল্প করছিলেন।
ছেলেটা বাবার দেয়া চিঠি তুলে দিল জ্ঞানী ব্যক্তির হাতে-- বলল, আমার বাবা আমাকে পাঠিয়েছেন উপদেশের জন্য। আপনি আমাকে উপদেশ দিন।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, তোমাকে আমি উপদেশ দেব। তার আগে তোমাকে একটা চামচ দিচ্ছি। এই চামচে তেল ভরে দিচ্ছি। তুমি পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখো। তবে শর্ত আছে -- তোমার চামচ থেকে যেন তেল পড়ে না যায়। ছেলেটা পুরো বাড়ি ঘুরল। ফিরে এসে বলল, এবার আমাকে উপদেশ দিন।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, বলো তো পাশের ঘরে কী আছে?
আমি বলতে পারব না।
তার পাশের ঘরে?
বলতে পারব না।
কেন পারবে না?
কারণ আমি সারাক্ষণ চামচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, যেন চামচ থেকে তেল পড়ে না যায়। কাজেই আশে-পাশে কী আছে সেদিকে আমি তাকাতে পারিনি।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, তুমি আবার যাও। তোমার হাতে চামচ থাকবে, চামচে তেলও থাকবে, সেই তেল তুমি ফেলতেও পারবে না; কিন্তু তোমাকে বলতে পারতে হবে, কোন ঘরে কী আছে!
ছেলেটা চামচ হাতে পুরো বাড়ি ঘুরে দেখল। বলল, এবার আমি বলতে পারব কোন ঘরে কী আছে। পাশের ঘরে আছে সুন্দর সুন্দর ছবি, তার পাশের ঘরে আছে সুন্দর কার্পেট। আরেকটা ঘরে আছে ফুলগাছ।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, তোমার চামচের তেল কোথায়?
ছেলেটি তাকিয়ে দেখল, চামচ থেকে তেল পড়ে গেছে।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, এটাই তোমার প্রতি আমার উপদেশ। আমাদের চামচ থেকে তেল পড়তে পারবে না। কিন্তু আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটছে তা দেখতে হবে। যা কিছু আনন্দের উপভোগের তাতে অংশ নিতে হবে, উপভোগ করতে হবে, উদযাপন করতে হবে। করতে হবে, কিন্তু চামচ থেকে যেন তেল পড়ে না যায়।
আমরাও আমাদের যা ভালো লাগে তা করব। তাতে অংশ নেব। আমরা প্রচুর বই পড়ব, প্রচুর খেলব, প্রচুর বেড়াব, ছোটাছুটি করব। আমরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেব, গান করব , নাচ করব, আবৃত্তি করব, ক্লাব করব, বিজ্ঞান ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, বুকক্লাব, অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব--সব। কিন্তু আমাদের পরীক্ষার পড়াও আমরা পড়ব। আমাদের ফল যেন বেশি খারাপ না হয়ে যায়।
Written by আনিসুল হক
ছেলেটা বাবার দেয়া চিঠি তুলে দিল জ্ঞানী ব্যক্তির হাতে-- বলল, আমার বাবা আমাকে পাঠিয়েছেন উপদেশের জন্য। আপনি আমাকে উপদেশ দিন।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, তোমাকে আমি উপদেশ দেব। তার আগে তোমাকে একটা চামচ দিচ্ছি। এই চামচে তেল ভরে দিচ্ছি। তুমি পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখো। তবে শর্ত আছে -- তোমার চামচ থেকে যেন তেল পড়ে না যায়। ছেলেটা পুরো বাড়ি ঘুরল। ফিরে এসে বলল, এবার আমাকে উপদেশ দিন।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, বলো তো পাশের ঘরে কী আছে?
আমি বলতে পারব না।
তার পাশের ঘরে?
বলতে পারব না।
কেন পারবে না?
কারণ আমি সারাক্ষণ চামচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, যেন চামচ থেকে তেল পড়ে না যায়। কাজেই আশে-পাশে কী আছে সেদিকে আমি তাকাতে পারিনি।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, তুমি আবার যাও। তোমার হাতে চামচ থাকবে, চামচে তেলও থাকবে, সেই তেল তুমি ফেলতেও পারবে না; কিন্তু তোমাকে বলতে পারতে হবে, কোন ঘরে কী আছে!
ছেলেটা চামচ হাতে পুরো বাড়ি ঘুরে দেখল। বলল, এবার আমি বলতে পারব কোন ঘরে কী আছে। পাশের ঘরে আছে সুন্দর সুন্দর ছবি, তার পাশের ঘরে আছে সুন্দর কার্পেট। আরেকটা ঘরে আছে ফুলগাছ।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, তোমার চামচের তেল কোথায়?
ছেলেটি তাকিয়ে দেখল, চামচ থেকে তেল পড়ে গেছে।
জ্ঞানী ব্যক্তি বললেন, এটাই তোমার প্রতি আমার উপদেশ। আমাদের চামচ থেকে তেল পড়তে পারবে না। কিন্তু আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটছে তা দেখতে হবে। যা কিছু আনন্দের উপভোগের তাতে অংশ নিতে হবে, উপভোগ করতে হবে, উদযাপন করতে হবে। করতে হবে, কিন্তু চামচ থেকে যেন তেল পড়ে না যায়।
আমরাও আমাদের যা ভালো লাগে তা করব। তাতে অংশ নেব। আমরা প্রচুর বই পড়ব, প্রচুর খেলব, প্রচুর বেড়াব, ছোটাছুটি করব। আমরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেব, গান করব , নাচ করব, আবৃত্তি করব, ক্লাব করব, বিজ্ঞান ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, বুকক্লাব, অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব--সব। কিন্তু আমাদের পরীক্ষার পড়াও আমরা পড়ব। আমাদের ফল যেন বেশি খারাপ না হয়ে যায়।
Written by আনিসুল হক
Post a Comment