পৃথিবীতে সবাই সমানভাবে জন্মগ্রহণ করে। সবাই একিভাবে পেটের মধ্যে থেকে জন্মে। সবাই একিভাবে ভাল হতে চায়,সবার ভালবাসা পেতে চায়,সবার আদর পেতে চায়,নিজের সুনাম মানুষের মুখে শুনতে চায়, সবাই তার অর্ডারে চলুক তা সে চায়। সবাই তাকে I love u বলুক এটাও সে চায়।
কিন্ত কথা হল, এই পৃথিবীতে সবাই যেহেতু এটা চায় তবে কে তাহলে সবাইকে এটা বলবে?
কেউ আপনাকে ভালবাসবে বলে তো জন্মায়নি? কেউ আপনার সুনাম বলবে বলে তো জন্মায়নি? কেউ আপনার অর্ডার শুনবে বলে তো জন্মায়নি? সবাই নিজের স্বকীয়তা চায়। কেউ কি পায়?
আসলে ইহাতে পাহার কিছুই নেই, যা আছে সবটুকু অর্জন করে নিতে হয়। আপনার অর্জন আপনাকে বলে দিবে, আপনি ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য না দেওয়ার যোগ্য। আপনি অর্ডার পাওয়ার যোগ্য না অর্ডার দেওয়ার যোগ্য। আপনি সুনাম পাওয়ার যোগ্য না সুনাম করার যোগ্য।
আসলেই নিজের অর্জনটাই ঠিক করে দিবে আপনি কোথায়?
একটি বাচ্চা খাইতেছে। যখন তার বাবা বলে, "তুমি খুব ভাল ছেলে, খুব সুন্দর করে খেতে পার "।বলার সাথে সাথে সে আরও বেশী করে খায়। তার খাওয়ার গতি বাড়া মানে তার সুনাম তাকে Support করা। কাউকে support কিংবা কারও স্বপ্নকে Support করলেই তার কাজের গতি বৃদ্ধি পায় ,যা ঐ শিশু বাচ্চাটারও গুণাবলি।
কিন্ত অপরদিকে যে শিশুটা একজোড়া সুন্দর জুতার জন্য প্রায়ই কাদে ।যখন তার বাবা মা অভাবের তাড়নায় তার বাচ্চার সেই পছন্দের জুতা কিনতে না পারে, সেই বাচ্চাটিই কয়েকদিন পর সেই জুতা ছাড়াই বাচতে শিখে সে কাদতে কাদতে একদিন ধৈর্য ধরতে শিখে। তার চোখের জল তাকে একদিন নতুন করে বাচতে শিখায়।
মজনু যখন লায়লিকে না পায়। তার 15 বছরের স্বপ্ন যখন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। তার জীবন নির্ভর মানুষ যখন অন্যের সঙ্গে বাচতে শুরু করল। এই কষ্টটার অসহ্য যন্ত্রনা তাকে কাদতে কাদতে জলহীন চক্ষুতে রুপান্তর করল ,শব্দহীন বধির রুপান্তর করল, মানহীন পাগলে পরিণিত করল।
আমাদের পাশের বাসার আন্টির মেয়ে যখন 17 বছর ধরে স্বপ্ন দেখল সে সারাজীবন কাটাবে তার স্বপ্নের সেই মানুষটার সঙ্গে, তাকে ছাড়া সে বাচবে না,তার সাথে একদিন কথা না বললে দিন কাটে না,সতেরোটি বছর যার সাথে স্বামীর মত কত দিন কাটিয়েছে, ঠিক কয়েকদিন পর যখন তার পরিবারকৃত সেলেক্ট অন্য ছেলে তার রুমে রাতে আসল সারাজীবনের জন্য। সে পরের দিন থেকে নতুন করে বাচতে শিখল,নতুনভাবে জীবন তৈরি করল । আমি জানি না ,সে আজও কিভাবে বেচে আছে? কিসের আশায় বেচে আছে?
এই অনিশ্চিত পৃথিবীতে বেচে থাকাটাই বড় ধৈর্যের পরিক্ষা। যে মানুষটা ক্ষুধার জ্বালা সহ্য না করতে না পেরে গলায় রশি টেনে নিজেই আত্মহত্যা করল, সে অনিল সুখের দিনগুলো পাবে কেমনে? যে মানুষটা একটা প্রেমের ছ্যাকা খাইয়া নিজের জীবনটাকে শেষ করল আত্মহত্যা করে, সেই মানুষটা কেমনে আট-দশটা প্রেমের সুখ লাভ করিবে?
আরে ভাই, অনাবিল সুখ পেতে হলে বেচে থাকার জন্য অসহ্যহীন যন্ত্রনা খুব কষ্ট করে হলেও সহ্য করে বাচতে হবে। দিনের বিপরীত যেমন কালো রাত আসবেই। আপনার আজকের এই অসহ্যহীন কষ্টের বিপরীতে অবশ্যই কোন না কোন অনাবিল সুখ আপনার জন্যই অপেক্ষা করতেছে। অন্তত নিজের জন্য, না কমপক্ষে আপনার বাবা-মার জন্য হলেও নিজেকে বেচে রাখুন।
হতাশার আকাশে ডুবে নিজেকে শেষ করার নাম জীবন নয়। যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, প্লানটা তারই যে আপনার দ্বারা তিনি কি করবেন? সুতরাং বৃথা আপনার চিন্তা কেন? জীবনে কখনও কখনো তার উপরও জীবনকে চাপিয়ে দিতে হয়। যাক না কোনদিকে এই জীবনের চাকা। দেখি না কি হয় ভবিষ্যৎ? জন্ম থেকে যার দুঃখ, তার জন্যই তো সুখ ভবিষ্যৎে ।
"সুখ" শব্দটার জন্যই হয়ত এই পৃথিবীর মানুষগুলো বাচে,স্বপ্ন দেখে, আশা করে, বাচতে চায় ।হোকনা একটা স্বপ্ন লুট, আবার নতুনকরে স্বপ্ন তৈরি করুন। বাচতে শিখুন। যা চলে যায় কিংবা যে চলে যায় তাকে চলে যেতে দিন। যে আপনাকে ছাড়া বাচতে পারে, আপনি কেন তাকে ছাড়া বাচতে পারবেন না? যে আপনার চিন্তা ছাড়া বাচতে পারে আপনি কেন পারবেন না?
"বাচতে হলে নিজেকে বদলাতে হবে,
চলতে হলে নিজেকে নিরব রাখতে হবে "
Post a Comment